প্রাচীন এক মিথ অনুসারে প্রাচীন রোমে ১৪ ফেব্রুয়ারি ছিল রোমান দেবদেবীর রানী জুনোর সম্মানে ছুটির দিন। জুনোকে নারী ও প্রেমের দেবী বলে লোকে বিশ্বাস করত। তবে এটি সর্বজনস্বীকৃত নয়। এখানেও দ্বিমত আছে। আবার কারো মতে, প্রাচীন রোমে ভ্যালেন্টাইন নামে একজন চিকিৎসক ছিলেন। তিনি রোগীদের প্রতি ছিলেন ভীষণ সদয়। অসুস্থ মানুষের ওষুধ খেতে কষ্ট হয় বলে তিনি তেতো ওষুধ ওয়াইন, দুধ বা মধুতে মিশিয়ে খেতে দিতেন। একদিন রোমের এক কারাপ্রধান তার অন্ধ মেয়েকে ভ্যালেন্টাইনের কাছে নিয়ে এসেছিলেন চিকিৎসার জন্য। ভ্যালেন্টাইন কথা দিয়েছিলেন তিনি তার সাধ্যমতো চিকিৎসা করবেন। মেয়েটির চিকিৎসা চলছিল এমন সময় হঠাৎ একদিন রোমান সৈন্যরা এসে ভ্যালেন্টাইনকে বেঁধে নিয়ে যায়।
ভ্যালেন্টাইন
বুঝতে পেরেছিলেন তাকে মেরে ফেলা হবে।
২৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্র“য়ারি
রোম সম্রাট ক্লডিয়াসের আদেশে ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তার
আগে ভ্যালেন্টাইন অন্ধ মেয়েটিকে বিদায়
জানিয়ে একটি চিরকুট লিখে
রেখে গিয়েছিলেন। তাতে লেখা ছিল,
ইতি তোমার ভ্যালেন্টাইন (From your
Valentine)। মেয়েটি চিরকুটের ভেতরে বসন্তের হলুদ ফুলের আশ্চর্য
সুন্দর রং দেখতে পেয়েছিল
কারণ এরই মধ্যে ভ্যালেন্টাইনের
চিকিৎসায় মেয়েটির অন্ধ দুচোখে দৃষ্টি
ফিরে এসেছিল।
আরো পড়ুন: ভালবাসা হল বিশ্বাসের সম্পর্ক
ভালোবাসার
এসব কীর্তির জন্য ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে
পোপ জেলাসিয়ুস ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখকে ভ্যালেন্টাইন্স
ডে হিসেবে ঘোষণা করেন। সেই থেকে এই
দিনটিকে মানুষেরা ভ্যালেন্টাইন্স ডে হিসেবে পালন
করে আসছে।
ভ্যালেন্টাইন্স
ডের উৎপত্তির বিষয়ে বেশ কিছু মত বা মত পার্থক্য রয়েছে।
কিন্তু মূল বিষয় হলো ’ভালোবাসা দিবস’। আর এই ভালোবাসা নির্দিষ্ট কোন সম্পর্কে আবদ্ধ
নয়। এই ভালোবাসা হলো সার্বজনীন ভালোবাসা।
সারা বিশ্ব
১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস
পালন করে থাকে। দিবসটি খুব আনন্দ উৎসবের মধ্যে পালন করা। এই এই দিনে পার্ক আর বিনোদন
কেন্দ্রগুলো থাকে কানায় কানায় পূর্ণ। বহু পূর্বে দিবসটি শুধু পাশ্চাত্য কেন্দ্রীক থাকলেও
সাড়া বিশ্বসহ বাংলাদেশ বেশ ঘটা করে পালন করে। আর তাই তো বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের কদর
প্রবলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে দিনের পর দিন। এ উৎসব মহাসমারোহে
উদযাপন করে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মানুষেরা
এই দিনে প্রায় কয়েক
কোটি ডলার ব্যয় করে।
আরো পড়ুন: ফিরে আয় আগুন পাখি
বাংলাদেশে
‘ভালোবাসা দিবস’ উদযাপন চালু করেন সাংবাদিক শফিক রেহমান। ১৯৯৩ সালে তার সম্পাদিত যায়যায়দিন
পত্রিকায় প্রথম এই দিনটিকে উপলক্ষ করে বিশেষ ‘ভালোবাসা সংখ্যা’ বের করেছিলেন তিনি।
দিনে দিনে সে ভালোবাসা দিবস বাংলাদেশে রূপ নিয়েছে রীতিমতো উৎসবে।