চিত্ত মোদের ধীর স্থির

তাই তো আজ কবিদের মত করে বলতে ইচ্ছে হয়, চিত্ত মোদের আজ ধীর-স্থির। কেননা কৈশর আর যৌবনের চাঞ্চল্যকে পেরিয়ে আমরা আজ আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপন  করছি। আমরা আজ এক পরিপক্ক অবস্থানে অবস্থান করছি। আমাদের গতি আজ উন্নয়নের দিকে। তাই তো সারা বিশ্বে আমাদের দেশ উন্নয়নের রোল মেডেল হিসেবে উপস্থাপিত হচ্ছে। আর হবেই না কেন! এ যে বাঙালি জাতির অর্জন। বাঙালি জাতির পরিশ্রমের ফসল। কোন শাসক গোষ্ঠীই এই জাতিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি, আর পারবেও না। 

 চিত্ত মোদের ধীর স্থির
স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বে গাঁথা ইতিহাস বিকৃতি, জাতির জনকের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা এমন কি ‘৭৫ সালে সপরিবারে হত্যার বিচার আইন করে বন্ধ করা হয়েছিল। একই সাথে গণতন্ত্র, মানবিক মর্যাদা, মানবাধিকার অর্থনৈতিক সাম্য, সামপ্রদায়িক সমপ্রীতির জন্য আমাদের যৌথ স্বপ্ন ছিঁড়ে দিয়েছিল মুষ্টিমেয় স্বাধীনতা বিরোধী,পাকিস্তানের পরাজিত শত্রু, গুটিকতক উচ্চবিলাসী সেনা কর্মকর্তার নৃশংসতায়। যাদের আত্মত্যাগ ও স্বজন হারানোর বেদনার মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি। আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি স্বাধীনতার মহানায়ক আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতাসহ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব ও সংগঠকদের। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যেসব ভারতীয় সেনা এই মাটিতে জীবন দিয়েছেন, রক্ত ঝরিয়েছেন, তাদের প্রতিও বিনম্র শ্রদ্ধা।

পাকিস্তানিদে রর্ববরতার বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়েছিল এই বাংলাদেশ। সেদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ছাড়াও দেশীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে পূর্ব দিগন্তে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যে রক্তিম সূর্য উদিত হয়েছিল, তা ছিল বিশ্বের বিস্ময়। সুমহান বিজয়ের এই মাসে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি শহীদ, মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা, শরণার্থীসহ মুক্তিকামী সব মানুষকে।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির জনকের অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে। একই সঙ্গে স্বাধীনতা অর্জনের মধ্যদিয়ে গণতন্ত্রের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও বৈষম্যহীনতার যে স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম, তাও আজ হাতের মুঠোয়। আমাদের সকল দক্ষ নেতা-নেত্রীদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দৃশ্যমান অর্জনও করেছে। বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে যেভাবে কার্যকরী ভূমিকা পালন করেছে, মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দিয়েছে তা রীতিমতো পৃথিবীর কাছে বিস্ময়কর। সরকার দেশ থেকে দারিদ্র্য দূরীকরণে সফলতা অর্জন করেছে। এর ফলে আমাদের দেশে এখন ভিক্ষাবৃত্তিসহ সামাজিক বৈষম্য বহুলাংশে কমে এসেছে। গ্রাম্য প্রধান বাংলাদেশের সকল গ্রামকে সাজানো হচ্ছে শহরের আদলে সকল সুযোগ সুবিধা দিয়ে।

গত কয়েক বছর ধরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ওপরে অবস্থান করছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বর্তমানে প্রায় ৪২ বিলিয়ন ডলার। তৈরি পোশাক শিল্পের প্রবৃদ্ধিও ভালো। গত কয়েক বছর ধরে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার পাশর্^বর্তী অন্যান্য দেশের থেকে এগিয়ে রয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রেও সাফল্য আসছে। নারীর ক্ষমতায়ন বাড়ছে। কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রবেশও বাড়ছে। শিশুমৃত্যু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় ভালো অবস্থানে আছে। গড় আয়ু বেড়েছে। বেড়েছে সাক্ষরতার হার। পদ্মা সেতু এখন শুধু স্বপ্ন নয় বাস্তব। করোনা-কালের মধ্যেও বাংলাদেশের অদম্য অগ্রযাত্রা থামেনি! স্বাধীনতার এ স্বপ্নযাত্রায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে সামনের দিনগুলোতে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে আরও বেশ কিছু বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।

আমাদের অর্জনের পাশাপাশি বিসর্জনের দিকগুলো নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। প্রশ্ন জাগে, স্বাধীনতার স্বাদ পরিপূর্ণভাবে মানুষের কাছে পৌঁছেছে কি ? এখনো সম্প্রীতির দেশে মাঝে মাঝে সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে! আবার রয়েছে সাম্রাজ্যবাদীদের বিশ্বায়ন। সাম্প্র্রদায়িকতা, মৌলবাদ, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এখনো বাঙালির মর্মমূলে ঝাঁকুনি দেয়। শিক্ষা খাতের অনিয়ম নিয়ে এখনো কলম ধরতে হয়। নারীর নিরাপত্তা, চিকিৎসা খাতে নৈরাজ্য, খাদ্যে ভেজাল, দুর্নীতি, পরিবেশ সমস্যাসহ নানা অনিয়ম যেন প্রতিদিনকার সমস্যা! এসব সমস্যা নিয়ে আজ ভাবনার সময় এসেছে।

‘জীবন ও সমাজ’ হলো একটি মাসিক অনলাইন ম্যাগাজিন পোর্টাল। আর মাস শেষে ‘সম্পাদকীয়’-এর মাধ্যমে মাসিক ম্যাগাজিনের পরিপূর্ণতা লাভ করে। আর এই মাসের আয়োজনে ছিল : 


Post a Comment

Previous Post Next Post