মন পরিবর্তমানের পাঁচটা পথ

 মন পরিবর্তমানের পাঁচটা  পথ 


সিস্টার  মেরী প্রশান্ত, এস এম আর এ : প্রথমেই আমরা দেখি,  মন পরিবর্তন বলতে আমরা কি বুঝি। মন পরবর্তন বলতে আমরা বুঝি, ভ্রান্ত পথ থেকে সঠিক  পথে ফিরে আসা। পাপ ময়তা থেকে পবিত্রতার পথে ফিরে আসা। আবার অন্য কথায় বলা যায়, পাপের পথ ছেড়ে ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসা। মন পরিবর্তনের বহু ও নানাবিধ পথ রয়েছে, সবগুলিই কিন্তু আমাদের স্বর্গে নিয়ে  যায়। 

১। মন পরিবর্তনের প্রথম পথ হল-

নিজেদের পাপ নিন্দা করা; ' তুমি প্রথমে তোমার পাপ স্বীকার কর, যেন ধর্মময় হয়ে  উঠতে পার'। এজন্য প্রবক্তারা বলেছেন, " আমার যত অন্যায় সবই আমি প্রভুর কাছে স্বীকার করব।আর সেই মুহূর্তেই তুমি হরণ করলে আমার হৃদয়ের অধর্ম।" অতএব আমিও আমার দোষ-ত্রুটি নিন্দা করব। আমার আত্মপক্ষ সমর্থণের জন্য তা প্রভুর কাছে যথেষ্ট। কেননা, আমার নিজ পাপ নিন্দা করলে আমি তো সতর্ক হয়ে  উঠব, যেন আবার সেই পাপকর্মে পা না বাড়াই। 

২। আমার আভ্যন্তরীণ অভিযুক্তা হতে 

আমার বিবেক উদ্দীপিত করব, যেন প্রভুর বিচারালয়ের সামনে  আমাকে অভিযুক্ত না করা হয়। এটা মন পরিবর্তনের উত্তম একটি পথ।


৩।  মন পরিবর্তনের ৩য় পথটি হলঃ শত্রুদের অপরাধ মনে না রাখা, ক্রোধ বর্জন করা, অমঙ্গলকারীদের ক্ষমা করা; এভাবে আমরা প্রভুর বিরুদ্ধে যে অপরাধ করেছি তার ক্ষমা পাব। এটি হল পাপ-প্রায়শ্চিতের উপায়।  "তোমরা যদি অন্যের অপরাধ ক্ষমা কর তাহলে তোমাদের স্বর্গীয় পিতাও তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন"

৪। মন পরিবর্তনের চতুর্থ পথঃ তা হল এমন জীবনপূর্ণ ও নিখুঁত  ভাবে প্রার্থনা কর, যা আমাদের হৃদয়ের অন্তস্থল থেকেই নিবেদিত। 


৫। পঞ্চম  পথ হলঃ অর্থদান। এ পথ খুবই মূল্যবান। আসলে কেউ যদি মিতাচারিতা ও বিনম্রতার সঙ্গে ব্যবহার করে, তাহলে সে নিজ পাপ আমূলেই ধ্বংস করবে; এটা যথার্থ কার্যকারী পথ। তার প্রমাণ হল, সেই কর- আদায়কারী,  যে নিজেরই কোন সৎকাজ প্রকাশ করতে না পারাতে এর পরিবর্তে নিজের পাপের বিনম্র স্বীকারোক্ত অর্পণ করল, আর এই ভাবে তার বিবেকের ভারী বোঝা থেকে নিজেকে মুক্ত করল।

আমরা মন পরিবর্তনের পাঁচটি পথ দেখলামঃ- 

১। পাপ নিন্দা,  

২। পরের অপরাধ ক্ষমা করা   

৩। প্রার্থনা  

৪। অর্থদান  

৫। বিনম্রতা। 


তাই আমরা এমনি করে বসে থাকব না, বরং প্রতিদিন এ পাঁচটা  পথ  ধরে এগিয়ে  যেতে চেষ্টা  করব। কেননা  এ পথগুলি সহজ, এগুলি এগুলি অনুশীরন আমরা আমরা অপারগ নই, এগুলির জন্য অর্থের তেমন প্রয়োজনও হয় না। অত্যন্ত অভাবের মধ্যে থেকেও আমরা সব সময়  আমাদের ক্রোধ বর্জন করতে, বিনম্রতা অনুশীলন করতে, অবিরত প্রার্থনা করতে, এবং নিজের পাপ নিন্দা করতে পারব। এই পথগুলি অনুশীলন করতে দারিদ্র কোন ভাবেই আমাদের বাধার সৃষ্টি  করতে পারবে না। এর  প্রমাণ সেই দরিদ্র বিধবা, যে মাত্র দু'পয়সা অর্পণ করে ছিল। 

আমাদের ক্ষতস্থান নিরাময় করার উপায়  শিখে, এসো আমরা এ ঔষধ অবলম্বন করি। তবেই সত্যিকার সুস্থতা ফিরে পেয়ে আমরা সৎসাহসের সঙ্গে পবিত্র ভোজে বসতে পারব, মহাগৌরবের সঙ্গে গৌরবের রাজা,  খ্রীষ্টকে বরণ করতে পারব ও শাশ্বত মঙ্গলদান জয় করতে পারব, আমাদের সেই প্রভু যীশখ্রীষ্টের অনুগ্রহ, দয়া ও মঙ্গলময়তার গুণে, যার কাছে ও যার সঙ্গে পিতার কাছে ও পরমপবিত্র, মঙ্গলময় ও আত্মার কাছে গৌরব পরাক্রম, সম্মান ও মহিমা আরোপিত  হোক যুগে যুগান্তরে। আমেন।

সহায়ক পুস্তক : সন্ন্যাস প্রাহরিক উপাসনা


[জীবন ও সমাজে- পাঠাতে পারেন আপনারও বস্তুনিষ্ঠ লেখা প্রবন্ধ, গল্প ও ফিচার। 
লেখা পাঠানোর ঠিকানা : jibonoshomaj@gmail.com ] 

[দৃষ্টি আকর্ষণ: যদি মনে করেন এমন কোন আলোকিত ব্যক্তিকে নিয়ে আমাদের জীবন ও সমাজের অনলাইন ম্যাগাজিনে বিশেষ ফিচার করা যেতে পারে, তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। আমরা সেই ফিচার করে তার আলো ছড়াবো, যাতে অন্যরাও সেই ব্যক্তিত্বের আলোয় আলোকিত হতে পারে। 

 আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন : jibonoshomaj@gmail.com] 

[পাঠকদের  দৃষ্টি আকর্ষণ:  করোনাকালে আপনার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের এমন কোন অগ্রণী ভূমিকা কি ছিল যা নিয়ে জীবন ও সমাজ-এ ফিচার করা যেতে পারে। তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন : jibonoshomaj@gmail.com]  


Post a Comment

Previous Post Next Post