স্বেচ্ছাচারিতাই বাড়াবে করোনার সংক্রমণ

প্রত্যয় কস্তা : কোন একটি দেশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখা জনগণের সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের তবে জনগণের সাহায্য ছাড়া তা কোনদিন সম্ভব না সরকারের একার পক্ষে কোন অসাধ্য সাধন করা সম্ভব না আমরা জানি, বর্তমান বিশ্বে "করোনা" নামক এক মহামারীর প্রকোপ বেড়েই চলেছে যার প্রভাবে গোটা বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়েছে। আজও সেই মহামারীর প্রকোপ থামেনি যতোদিন যাচ্ছে, ততো এর প্রভাব বেড়েই চলেছে গত বছর করোনা প্রথম ঢেউ কোনরকমে পার করতে না করতেই এবছর তার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে এতে অনেক মানুষ আক্রান্ত হয়ে পড়েছে, অনেকে মারা গেছেন আমাদের সাধারণ জনগণের সুরক্ষার জন্য সরকার নানাবিধ পদক্ষেপ নিচ্ছেন আমাদের সিংহভাগ শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলো গত এক বছরে অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে যেখানে দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য শিক্ষার্থীরা জ্ঞান অর্জনের আসরে বসতো, সেই আসর আজ এক বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে দেশ অনেক পিছিয়ে পড়েছে। সরকারপ্রধান এমতাবস্থায় খুব হিমশিম খাচ্ছেন দেশে যখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে তখন সরকার আবার লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন গত ১৪ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর লকডাউন দেওয়া হয়েছে কিন্তু এই কঠোর লকডাউন কি আসলে বাস্তবায়িত হচ্ছেগতকাল দেখা গিয়েছে গণপরিবহন অর্থাৎ বাস ছাড়া সবকিছু চলমান। এমনকি কোথাও-কোথাও যানজটেরও সৃষ্টি হয়েছে

   স্বেচ্ছাচারিতাই বাড়াবে করোনার সংক্রমণ 

গত ২৯ মার্চ যে ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে তা কি সবাই মেনে চলছেন? নতুন করে করোনা’ পরিস্থিতি অবনতিতে বর্তমানে ফ্রান্স অস্ট্রেলিয়া এমনকি আমাদের নিকটতম প্রতিবেশি দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশে লকডাউন চলছে এখানে প্রশ্ন হচ্ছে প্রশাসনব্যবস্থা দ্বারা কড়াকড়ি আরোপ বা কঠোর বিধি-নিষেধের মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধের করমসূচি কতোটা কার্যকর হবে? রাস্তার এতো গাড়ি-ঘোড়া দেখে অনেকে বলছেন এই লকডাউন কার্যকর হয়নি, কিন্তু এই সকল বিধি-নিষেধ জোর-জবরদস্তি করে বাস্তবায়ন করা কি সরকারের কাজ?

ছোটবেলায় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা একটা ছড়া পড়েছিলাম" আমি হবো সকাল বেলার পাখি" এই কবিতায় কবি মানুষকে জাগ্রত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এভাবেই, "তোমরা যদি না জাগো মা কেমনে সকাল হবে?" এই পঙক্তিতে তিনি আহবান করেছেন বিভীষিকা থেকে দূরে থাকার জন্য নিজেদের সচেতন হতে বলছেন আমরা মনে করি, সরকারের মূলকাজ হলো সতর্কবার্তা দেওয়া আমরা বর্তমানে ঢাকা শহরে সাধারণ মানুষের অর্ধেকেরও অধিক নিয়মিত মাস্ক পরিধান করি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে এটাই সরকারের দায়িত্ব এক্ষেত্রে সরকার সফল হয়েছেন অন্যদিকে, ভ্যাকসিন সরবরাহ আশানুরূপ এবং এটা সহজে পাওয়া যাচ্ছে এরপরও কেউ যদি বলেন যে সরকারি বিধিনিষেধ কাজে আসেনি তাহলে আর কিছু বলার নেই দ্বিতীয়ত, টিকা আমদানির ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলো বিপাকে পড়েছে টিকার উৎপাদক রপ্তানিকারকরা বলতে গেলে সকলেই উন্নত দেশের তারা গরীব অনুন্নত দেশে যথারীতি টিকা প্রদান করছে না ফলে সকল দেশ দূর্ভোগে পড়েছে কোনো-কোনো দেশে টিকা আছে, টিকা নেই- এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি সৌভাগ্যবান দেশ কারণ আমরা দূরদর্শী কুটনীতির পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছি এবং টিকা পেয়েছি বন্ধুত্বের স্মারক হিসাবে। শেষ পর্যন্ত কোটিরও অধিক টিকা পাওয়ার আশাও আমরা করছি সরকার জনগণের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য কিছু জরুরি বিধি-নিষেধ আরোপ করেছেন এখন তা জোর করে বাস্তবায়ন করতে হবে কেন? মনে রাখতে হবে, উন্নত দেশে সরকার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে না, নাকও গলায় না সুতরাংউন্নত দেশের করোনা নিয়ন্ত্রণে পদাঙ্ক অনুসরণ করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতার মাধ্যমে আমাদের অবশ্যই অগ্রগতি লাভ করতে হবে। মূলত, স্বেচ্ছাচারিতা হ্রাস করে করোনার সংক্রমণ রোধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post