সাইফুল ইসলাম : এবছর ফাল্গুনী হাওয়া আর গাঁয়ে লাগলো না। যতটুকু ব্যথা পাওয়ার ছিলো তার থেকেও অধিক ব্যথা পেয়েছি এই ফাল্গুনে। পূর্বের ফাল্গুন ছিলো নতুন উত্তরীয় উষ্ণ বাতাসের সাথে সদ্য কেটে নেয়া খয়েরী ধুসর ধানখেতের ভেতর জোছনা রাতে ঘুরে বেড়ানো আর শুকনো পাতার মরমর শব্দের সাথে গভীর মিতালী ।
প্রতিটা ফাল্গুন আসে জীবনের নতুন অধ্যায় সাজিয়ে। কিন্তু এই ফাল্গুন শহুরে ইট-পাথরের ধুলো এবং যান্ত্রিকতার তিব্র আর্তনাদে কোথা মিলিয়েছে ! এবছরের ফাল্গুন বোঝা গেলো না, তবুও সুখ এই-যে শহুরে বাতাসে ফাল্গুন আসেনি সত্য কিন্তু জীবনটাকে দেখেছি খুব কাছে থেকে। " আলী ভাই আইছো"? টানা সুরে খুবই সাধারণ একটা মানবিক প্রশ্ন। ঢাকার রাস্তায় জ্যামে পড়ে এরকম বহু প্রশ্ন শুনেছি সিএনজি চালকের। মমতায় জড়ানো এসব কন্ঠ শুনে প্রথমেই একটা বিষাদে পরিণত হয় সমস্ত মানবসভ্যতা - "হ ভাই আইয়্যা পড়লাম-দেহি একটা ট্রিপ দিয়া আহি" এই প্রশ্ন এবং তার উত্তরে একটা নিগুঢ় অর্থ থাকে যা জীবন ও সমাজের ভাবার্থ প্রকাশ করে। এটাই জীবন আর বাস্তবতা। কখনো এটা প্রবাহমান তীব্র কর্ণফুলীর মতো আবার কখনো এটা ভাঙনের উজানে বিস্তৃত ধূসর চরাচর- আলী ভাই আইছো- এই ফাগুনের হাওয়া গায়ে লাগলো না। গ্রামের ওই তেপান্তের কালাই মুগ মসুরের খেত আর সরষের হলুদ ফুলে ছাওয়া কৃষকের বাড়ি ধরে আলসে বয়ে যাওয়া শ্রীমন্তের জলেই সে মিলে গেছে। এটাই জীবন ও সমাজের প্রকৃত চিত্র -এটাই আমরা আর আমাদেরই অংশ -
লেখক : শিক্ষার্থী, ব্রজমোহন কলেজ
ইতিহাস বিভাগ ,বরিশাল
Tags:
জীবন