স্বপ্ন ও বিজয় হোক আগামীর লক্ষ্য


সম্পাদকীয়, ডিসেম্বর, ২০২০ : মাথাপিছু জিডিপিতে ভারতকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক সংস্থাটির পূর্বাভাস ঠিক থাকলে ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি হবে ১ হাজার ৮৮৮ ডলার, ভারতের ১ হাজার ৮৭৭ ডলার। মূলত, করোনার এই সময়ে ভারতের অর্থনীতি বেশি মাত্রায় সংকুচিত হবে বলে আইএমএফ বলছে। সে তুলনায় বাংলাদেশে এবার ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হবে। আইএমএফের পূর্বাভাস অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি ১০ দশমিক ৩ শতাংশ ঋণাত্মক হলে সংকোচনের দিক দিয়ে সারা বিশ্বেই ৩ নম্বরে চলে আসবে ভারত। 

বাংলাদেশের মানুষের পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্ন নয়। মানুষের স্বপ্ন পূরণে এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এই পদ্মা সেতু শুধুমাত্র জনগণের স্বপ্ন নয়, এটি একটি রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন। গোটা জাতিকে সঙ্গে নিয়ে বিজয়ের মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আরেকটি বিজয়ের ইতিহাস রচিত হলো বাংলাদেশে। বিজয়ের মাসে যেন আরেকটি বিজয় উপহার পেল জাতি। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর অবশেষে সম্পন্ন হলো পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ। শেষ হলো অপেক্ষার প্রহর। স্বপ্ন হলো সত্যি। সব অনিশ্চয়তা, অপপ্রচারকে মিথ্যা প্রমাণ করে অবিশ্বাস্য এক স্বপ্ন বাস্তবায়ন করল বাংলাদেশ। বিজয়ের মাসে শেষ হয়েছে পদ্মা সেতুর ৪১টি স্প্যান বসানোর কাজ। কাঠখড়, নানা-ঘাত-প্রতিঘাত, গুজব, আরও কত বাঁধা পেরিয়ে দৃশ্যমান হলো ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের পদ্মা সেতু। এতে নৌপথের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। বিজয়ের মাসে সর্বশেষ স্প্যানটি বসানোর মাধ্যমে যেন আরেকটি বিজয় উল্লাসে শরিক হলো বাংলাদেশ।

ডিসেম্বর মাস, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় কাঙ্খিত বিজয়। ১৯৭১ সালের এই মাসেই আমরা অর্জন করেছি মহান স্বাধীনতা, লাল-সবুজের পতাকা। ৩০ লাখ শহীদ আর দুই লাখ মা-বোনের বীর মাতার ত্যাগের ফলশ্রুতিতেই অর্জিত এই বাংলাদেশ। বাঙালি জাতির সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রাম এর রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ঘটনা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবে যে স্বাধীন বাংলার বিজ বপিত হয়েছিল, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী যে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন জাতিকে দেখিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতির সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয় এই মাসে। স্বাধীন জাতি হিসেবে সমগ্র বিশ্বের মানচিত্রে সগৌরবে আত্মপরিচয় লাভ করে বাংলাদেশ। অর্জন করে সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত পতাকা।


আর বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, বাংলাদেশ জাতির পিতার সোনার বাংলাদেশে পরিণত হচ্ছে ধীরে-ধীরে। কারণ বিজয়ের চেতনার মূর্ত প্রতীক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। দেশের সকল মানুষের অন্তরে বিজয়ের চেতনা সত্যিকার অর্থে জাগ্রত হোক। বিজয়ের মাসে এটাই প্রত্যাশা। বিজয়ের চেতনা হোক উন্নয়নের হাতিয়ার। দেশের মানুষের মেধা আছে। শুধু দরকার বিজয়ের চেতনাকে বুকে ধারণ করে সত্যিকার অর্থে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করা। এখনো কিছু নিবেদিতপ্রাণ মানুষ আছে বলেই আজকে বাংলাদেশ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’ রূপান্তরিত হয়েছে। সম্প্রতি স্বপ্নের পদ্মা সেতুও বাস্তবে রূপ নিয়েছে। এমন হাজারো স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে প্রতিনিয়ত। যাদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে তারাই সত্যিকার অর্থে বিজয়ের চেতনা ধারণ করেন।

গুরুত্বপূর্ণ এই ডিসেম্বর মাসের ২৫ তারিখ সারা বিশ্বের খ্রিস্টান ধর্মালম্বীরা পালন করেন ঈশ্বর তনয়-এর জন্মদিন। অর্থাৎ যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন। এই দিনের মূল শিক্ষা হলো ঈশ্বর মানুষের পরিত্রাণের জন্য তার নিজ পুত্রকে এই পৃথিবীতে পাঠালেন যাতে মানুষ পাপ থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন। আর এই দিনের শিক্ষা হলো অন্তর আত্মায় বড় হওয়ার দিন। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলে এক হয়ে সার্বিক মাঙ্গলিক কিছু করার দিন। এসব কিছু নিয়েই হোক আমাদের যাত্রা। ২০২০ সালের সকল অশুভ কিছু ভুলে গিয়ে নতুন উদ্যমে বরণ করে নেয়া হোক আমাদের পণ। আশা রাখি, করোনাভাইরাসকে আমরা আমাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব। সেজন্য প্রয়োজন সচেতন হয়ে জীবন-যাপন করা। সারা বিশ্বের গবেষকগণ কাজ করছেন এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ায়ের জন্য। আজ হোক আর কাল মানব সভ্যতার জয় হবেই একদিন। 

নতুন বছর সকলের জীবনের বয়ে আনুক সফলতা। সকল অন্ধকার ঘুচে প্রতিষ্ঠিত হোক আলোর রাজ্য। যে রাজ্যে থাকলে সকলের জন্য সমান অধিকার। থাকবে না দুর্বলের প্রতি কোন অত্যাচার। দিকে-দিকে  প্রতিষ্ঠিত হোক মানব সভ্যতার জয়গাঁথা। জীবন ও সমাজ-এর পক্ষ থেকে সকল লেখক, পাঠক ও ‍উপকারী বন্ধুদের জানাই শুভ নববর্ষ। আমাদের সাথে থাকুন ও সাহায্য করুন সৃষ্টিতে শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশে ও বিকাশে।

‘জীবন ও সমাজ’ হলো একটি মাসিক অনলাইন ম্যাগাজিন পোর্টাল। আর মাস শেষে ‘সম্পাদকীয়’-এর মাধ্যমে মাসিক ম্যাগাজিনের পরিপূর্ণতা লাভ করে। আর এই মাসের আয়োজনে ছিল : 


[জীবন ও সমাজে   পাঠাতে পারেন আপনারও লেখা প্রবন্ধ, গল্প ও ফিচার। 

লেখা পাঠানোর ঠিকানা : jibonoshomaj@gmail.com]

Post a Comment

Previous Post Next Post