জাসিন্তা আরেং :
![]() |
জাতিসংঘ: ৭৫ বছরের পথ চলা: প্রত্যাশিত ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজন জাতিসংঘ |
জাতিসংঘের দীর্ঘ ৭৫ বছরের পথ চলায় বিশ্বের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ক্ষুধা, দারিদ্র্যতা, ও নারী-পুরুষ বৈষম্য, জাতি, বর্ণ-ধর্ম বৈষম্য এবং যেকোন যুদ্ধ-সংঘাত নিরসনে ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনন্য অবদান রেখে চলেছে। এছাড়াও শরণার্থী সঙ্কট, শিশু ও নারী অধিকার রক্ষা ও সংরক্ষণে ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা এবং যেকোন বৈশ্বিক মহামারী বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সাহায্য ও সহযোগিতা করে যাচ্ছে। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ২৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিরাপত্তা, আইন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মানবাধিকার অধিকার রক্ষা ও নিশ্চিত করা; সামাজিক অগ্রগতি এবং পারস্পরিক সহযোগিতার লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল। যা বর্তমানের এ পর্যায়ে এসে বহুমাত্রিকতা পেয়েছে, একইসাথে সম্প্রসারিত হয়েছে লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশে কাজের পরিধি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই যুদ্ধ-বিগ্রহ ও সংঘাত নিরসনে মিত্রশক্তি হিসেবে জাতিসংঘ সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। বৈশ্বিক এই করোনা মহামারীতেও জাতিসংঘ বৈষম্য ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং সোহার্দের ওপর গুরুত্বারোপ করার পরামর্শ দিয়েছে। ৭৫তম জাতিসংঘ দিবসে জাতিসংঘের সেক্রেটারী জেনারেল বৈশ্বিক মহামারী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ও পারস্পরিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে বিশেষ আহ্বান রেখেছেন। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে যে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে তা নিরসনেও জাতিসংঘ প্রাণপণ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বিভিন্ন দেশের সাথে আন্তর্জাতিক ও শান্তিপূর্ণ এবং ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে জাতিসংঘের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
জাতিসংঘের ৭৫তম দিবসে জাতিসংঘের জেনারেল অ্যাসেম্বলীর প্রেসিডেন্ট ভলকানো বোজকির বলেন, ‘৭৫ বছর আগে যখন জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা করা হয়, তখন প্রতিষ্ঠাতারা তিনটি বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছিলেন তা হলো, শান্তি ও নিরাপত্তা, উন্নয়ন এবং মানবাধিকার। এই তিনটি বিষয় যেমন সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং তেমনি একে অপরের ওপর নির্ভরশীল ও পরিপূরক। এটা ছাড়া কেউ এগিয়ে যেতে পারে না, ৭৫ বছর ধরে জাতিসংঘ নির্ধারিত বিষয়গুলোকে গুরুত্ব ও প্রতিষ্ঠার করার জন্য অদম্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের অর্জনকে ছোট করে দেখার কিছু নেই, কেননা তারা তাদের প্রত্যাশিত লক্ষ্য অর্জন করতে পাচ্ছে এবং জাতিসংঘের প্রতি দেশগুলোর আস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে, বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ৫১ থেকে ১৯২তে দাঁড়িয়েছে।
পরিশেষে, প্রত্যাশিত ভবিষ্যত গড়তে আমাদের সম্মিলিতভাবে এগিয়ে যেতে জাতিসংঘের উদ্দেশ্যসমূহ উপলব্ধি করতে হবে এবং একইসাথে টেকসই উন্নয়নে নিজ-নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে যেতে হবে। বিশ্বের সকল দেশকে জাতিসংঘের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে। কেননা সম্মিলিত কাজের মধ্যদিয়ে বিশ্ব পাবে নতুন মাত্রা।