অনলাইনে সম্পৃক্ত গোটা বিশ্ব

প্রত্যয় কস্তা :

গোটা বিশ্ব যখন করোনার প্রকোপে স্থবির, তখন অনলাইন সবার পাশে বন্ধুর মতো দাঁড়ায়। সবাই অনলাইনে পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করে চলেছেন। এই বিশ্ব যখন অনলাইন সম্পর্কে নানাবিধ সমালোচনার জন্ম চলমান, ঠিক তখনই অনলাইন তার আপন পথ মানুষকে চিনিয়ে দিলো। মানুষ অনলাইন ব্যবহারের আগে ম্যানুয়ালি সবকিছু করতে অভ্যস্ত ছিল। বর্তমানে মানুষ অনলাইনে সময়সাপেক্ষ কাজ সহজেই করতে পাচ্ছে। যখন চীন প্রথম কোভিড–১৯ এ আক্রান্ত তখন অনলাইন সে বিষয়ে সবার কাছে সতর্কবার্তা পৌঁছে দেয়। আমাদের বিশ্ব আজ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা আজ অনলাইনে কাজ করছি। সব কিছু যেন এক আশ্চর্য গতিতে চলছে। আবার অনলাইনে শিক্ষকরা ক্লাস এবং পরীক্ষাও নিচ্ছেন। অনেকে নিজেদের অনলাইনে নতুন-নতুন কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছেন। অনেকে উন্নয়নমূলক কাজে হাত দিয়েছেন। অনেক দেশ এই সঙ্কটকালে নিজেদের বিভেদ ভুলে গিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে যুবসমাজ অনলাইনের মধ্যদিয়ে সফলতার মুখ দেখছে। এ যেন তরুণদের হাতে আলাদিনের আশ্চর্য চেরাগের মত। সেই রূপকথার আলাদিনের আশ্চর্য চেরাগ যেন যুবসমাজের হাতেই রয়েছে। আলাদিনের আশ্চর্য চেরাগে ঘষার সাথে-সাথে যেমন ভয়ঙ্কর দৈত্য বেড়িয়ে এসে আলাদিনের সব ইচ্ছা পূরণ করে দিতো; ঠিক তেমনি চেরাগ আজ সকলের হাতের মুঠোয়, যার দ্বারা সকল কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে। এসব কিছুর মূল শক্তি হলো অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। অনলাইনে যখন যা প্রয়োজন, তাই খোঁজা বা দেখা সম্ভব হচ্ছে। এই জাদুর চেরাগই করোনার প্রকোপ থেকে বাঁচার পথ দেখিয়েছে। সর্বপ্রথম চীন যখন এই মহামারীর মরণ থাবায় আক্রান্ত, তখন এই অনলাইনই গোটা বিশ্বাবাসীকে এ সম্পর্কে সতর্কবার্তা দেয়। ইতালিতে যখন করোনায় বিপর্যস্ত, তখন অনলাইনেই সিংহভাগ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। ইতোমধ্যে, বিভিন্ন দেশের প্রধান নেতারা এই ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনেক পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছেন। সারা দেশে করোনা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করায় সবাই এখন ভীতসন্ত্রস্ত জীবন যাপন করছে। কেননা করোনা ছোঁয়াচে রোগ যা একজনের কাছ থেকে সহজেই অপরের কাছে ছড়ায়। এমতাবস্থায় মানুষ মানুষের কাছে যেতেও ভয় পায়। ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কারো মরদেহ কেউ দাফনে এগিয়ে যায় না। কেউ অসুুুস্থ ব্যক্তির কাছে যেতেও সাহস করে না। সবাই এক প্রকার বন্দিদশার মতো বসবাস করে আসছে। গোটা বিশ্ব এখন করোনার আতঙ্কে আতঙ্কিত। 

অনলাইনে সম্পৃক্ত গোটা বিশ্ব

কিন্তু বিশ্ব মানবতার এই হাহাকার সামান্য হলেও কমানোর জন্য অনলাইন এক অনবদ্য উপায় হিসেবে কাজ করছে। মানুষ নিরূপায় হয়ে অবশেষে একমাত্র বাঁচার পথ হলো অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। যার আশীর্বাদে সেবা প্রত্যাশীরা অনলাইনে চিকিৎসাসেবা নিতে পারছে। অন্যদিকে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধ, এর প্রতিকার এবং করোনা পরবর্তী জীবন যাপনের জন্য ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রামে আলাপ-আলোচনার মধ্যদিয়ে বিশ্বের নেতা-নেতৃগণ নানাবিধ পদক্ষেপ নেয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের কর্মচাকা থেমে যাওয়ায় কম-বেশি সকলেই আর্থ-সামাজিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। সমাজে বেকারত্বের হার বেড়েই চলেছে। কোথাও-কোথাও খাদ্য সঙ্কটও দেখা দিয়েছে। সবার জীবন এক হতাশার মধ্যদিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। কিন্তু অনলাইনের হাত ধরে মানুষ এক নতুন জীবনের সন্ধান পেয়েছে। এ ভার্চুয়াল জগতে তরুণ সমাজের বিচরণ দিন-দিন অগ্রগতি লাভ করছে। বর্তমানে বেশিরভাগ অফিস-আদালত থেকে শুরু করে সকল কার্যক্রম ভার্চুয়াল সংঘটিত হচ্ছে। পরিশেষে বলা যায়, ভার্চুয়াল লাইফ মানুষকে সহজভাবে বাঁচতে শিখিয়েছে। গোটা দুনিয়াটাই যেন অনলাইন নির্ভর।।


[  জীবন ও সমাজে   পাঠাতে পারেন আপনারও লেখা প্রবন্ধ, গল্প ও ফিচার। 

লেখা পাঠানোর ঠিকানা : jibonoshomaj@gmail.com ]


Post a Comment

Previous Post Next Post