করোনাকালে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পাশে সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল এণ্ড কলেজ

জাসিন্তা আরেং : মহামারী এই করোনাকালে সারা দেশের সর্বস্তরের মানুষের অবস্থা যেমন স্থবির হয়ে পড়েছে তেমনি স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অবস্থাও ব্যতিক্রম নয়। কোন না কোনভাবে সবাই আক্রান্ত এবং প্রভাবিত। আর এমনতর সময়ে খ্রিস্টান মিশনারী, সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল এ- কলেজের দৃষ্টান্ত নজর কাড়ার মতো।  বাংলাদেশের সেন্ট যোসেফ প্রভিন্সের হলিক্রস ব্রাদারগণ বিগত ১০০ বছর ধরে সুনামের সাথে উক্ত প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার স্বাক্ষর রেখে যাচ্ছেন। এই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অধ্যক্ষের দায়িত্বে রয়েছেন শ্রদ্ধেয় ব্রাদার প্রদীপ প্লাসিড গমেজ সিএসসি মহোদয়। এখন পর্যন্ত স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্যে নিয়মিত অনলাইনে ক্লাস চলছে। পরীক্ষার দিনগুলো বাদ দিলে এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহ হতে গড়ে দৈনিক নিয়মিত কমপক্ষে ৪০-৫০টি ভার্চুয়াল ক্লাস হচ্ছে যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। এপ্রিল থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে ৪,০০০-৫,০০০ মত ভার্চুয়াল  ক্লাস নেওয়া হয়েছে যা কোন একক প্রতিষ্ঠানের দ্বারা বিরল ঘটনা। শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জনের জন্যে সর্বোত্তম প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। জাসিন্তা আরেং এর সাক্ষাৎকারধর্মী ফিচারে উঠে এসেছে এই করোনাকালে সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল এণ্ড কলেজ  কর্তৃপক্ষের  শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পাশে  দাঁড়ানোর গল্প। 

সাক্ষাৎকার গ্রহণকালে উক্ত স্কুলের ব্রাদার নির্মল ফ্রান্সিস গমেজ সিএসসি বলেন, আমাদের অধ্যক্ষ মহোদয় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার পাশাপাশি এখানে কর্মরত প্রত্যেকজন শিক্ষক ও কর্মীর বেতনসহ সকল আর্থিক প্রাপ্তি  নিশ্চিত করেছেন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের জ্ঞানদানের পাশাপাশি মানবীয় দিকগুলো বিবেচনা করে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের পাশে থাকার নিরন্তর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। 

চলুন দেখে আসি ব্রাদারের সাথে সাক্ষাৎকার আর কি কি ফুঁটে উঠেছে : 




করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে স্কুল থেকে আপনাদের পদক্ষেপ কি ছিল? 

১৬ মার্চে প্রাইমারী শাখার ছুটির পর এমনকি মাধ্যমিক ও কলেজ শাখার ক্লাস প্রায় অর্ধেক সময় হয়ে যাওয়ার পর টেলিভিশন সংবাদ মাধ্যমে আমরা জানতে পারি পরদিন অর্থাৎ ১৭ মার্চ থেকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি। পরিতাপের বিষয় যে, আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য কোন প্রকার দিক-নির্দেশনা দেওয়া বা চলমান অবস্থায় শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে কি করা যায় এমন কোন পরিকল্পনা করার সুযোগ পাইনি। যাই হোক তিন সপ্তাহ সময় নিবিড় পর্যবেক্ষণ করার পর সেন্ট গ্রেগরী কর্তপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা চলমান রাখার জন্য এবং তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্ববোধ থেকে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে অনলাইন ক্লাশ শুরু করা হয়। প্রথমত সেন্ট গ্রেগরী কর্তৃপক্ষ শিক্ষকের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসের পরিকল্পনা গ্রহণ করে ও তা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করেছে। তখনো কারো জানা ছিলো না এই ছুটি/সাধারণ ছুটি কতদিনের হবে। দ্বিতীয়ত, প্রতিষ্ঠান প্রধান প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এবং শিক্ষকদের অংশগ্রহণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে নানাভাবে সংযোগ সৃষ্টি করেছেন যেন আমরা যা-ই করি না কেন তাতে যেনো বুঝাপরার কোন দূরত্ব না থাকে এবং অংশগ্রহণ বাড়ে।

 অনলাইনে ক্লাশের পাশাপাশি পরীক্ষা নেয়ার পদ্ধতি কি? এক্ষেত্রে কোন বিষয়ের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে?

শিক্ষকগণ ক্লাস নেওয়ার সময় নিয়মিত ধারাবাহিক মূল্যায়ন করছেন। শিক্ষার্থীদের বাড়ির কাজের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশ্ন দিয়ে দিচ্ছেন এবং তারা সেই কাজ শেষ করে অনলাইনেই শিক্ষকের কাছে জমা দিলে শিক্ষক আবার তা মূল্যায়ন করে দিচ্ছেন। ক্লাস নেওয়ার সময় অথবা পরে বিভিন্ন পদ্ধতিতে শিক্ষক আবার কতজন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল বা ক্লাস অনুসরণ করেছে কিনা তা নিশ্চিত. করছেন। সিলেবাস অনুযায়ী প্রতিটি সাময়িক পরীক্ষার সিলেবাস ধারাবাহিকভাবে সমাপ্ত করে শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত রুটিনের মাধ্যমে প্রতিদিন অনলাইনে/গেইটে ছাপা প্রশ্ন দেওয়া হচ্ছে, অভিভাবকগণ পরীক্ষকের দায়িত্বে থাকেন যে শিক্ষার্থী বিশ্বস্তভাবে এবং সময় অনুযায়ী পরীক্ষাগুলো লিখতে পারে। পরীক্ষা শেষে কাছের অভিভাবকগণ স্কুল গেইটে এবং দূরের অভিভাবকগণ পোস্টে/কুরিয়ার সার্ভিসে খাতাগুলো স্কুলে/কলেজে পাঠাচ্ছেন যা শিক্ষকগণ মূল্যায়ন করে প্রাপ্ত নম্বর বিভিন্ন মাধ্যমে জানিয়ে দিচ্ছেন। এই পদ্ধতি নিয়মিত চালু রাখার মূল উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীকে নিয়মিত পাঠের সাথে সংযুক্ত রাখা এবং বর্তমান শ্রেণিতে কাঙ্ক্ষিত শিখনফল অর্জন করে আগামী বছরে নতুন শ্রেণিতে নতুন সিলেবাসের জন্য নিজেকে পূর্ণভাবে যোগ্য করে তোলা। আমাদের বিশ্বাস যারা আমাদের এই প্রচেষ্টার সাথে সম্পৃক্ত থাকবে তারা কেউ অযোগ্য ও অপ্রস্তুত অবস্থায় উচ্চতর শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়ে শিক্ষার মান ও নিজেকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে না।

নিয়মিত অনলাইনে ক্লাস নিশ্চিত করতে কতটুকু ঝুঁকি ছিল এবং তা মোকাবেলায় পদক্ষেপগুলো কি কি ছিল? 

শহরে বিচ্ছিন্নবস্থায় থাকা এবং অনেক পরিবার গ্রামে চলে যাওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সাথে যোগাযোগ করে অনলাইনে সম্পৃক্ত করা, অনলাইন ক্লাসে অনভ্যস্ত শিক্ষককে এই ব্যবস্থায় সম্পৃক্ত করা ও সচল রাখা, শিক্ষক-অভিভাবক, শিক্ষার্থী সবাইকে উক্ত বিষয়ের গুরুত্ব অনুধাবন করানো, ক্যামেরার সামনে কথা বলতে অনভ্যস্ত শিক্ষককে অভ্যস্ত করানো, প্রথম থেকেই মান সম্পন্ন ক্লাস নিশ্চিত করা, বাসায় বসে সততার সাথে পরীক্ষা লেখা, অভিভাবককে শিক্ষককের ভূমিকায় অবতীর্ণ করানো-এসব ছিল আমাদের ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার চ্যালেঞ্জ। 

অনলাইন ক্লাসের মধ্যদিয়ে কতটুকু আশান্বরূপ ফল পেয়েছেন?

অনলাইন ক্লাসের কার্যক্রম লকডাউন পরিস্থিতিতে হতাশ-নিরাশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। শিক্ষার্থী আবার পড়ালেখায় ফিরে এসেছে। সকলেরই অনুভূতি যে স্কুল বিগত দিনগুলোর মতই চলমান রয়েছে। সিলেবাস অনুসারে পাঠদান শেষ করে টার্ম অনুসারে পরীক্ষা ও মূল্যায়নের ব্যবস্থা চলছে। বর্তমানে পরীক্ষার খাতা জমা দেওয়ার তথ্যানুসারে ৯৫% এর  বেশি শিক্ষার্থী আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় সম্পৃক্ত হতে পেরেছে। মূলত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অত্যন্ত ইতিবাচক সাড়াদান, মূল্যায়ন, সমর্থন ও মন্তব্য উক্ত ব্যবস্থার সর্বোচ্চ সফলতারই ইঙ্গিত বহন করে। পরিশেষে এটুকুই বলা যায় যে, করোনাকালের পূর্বে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং প্রতিষ্ঠান যতটুকু কর্মচঞ্চল ছিলো বর্তমানে তার চেয়ে কোন অংশে কম বলা যাবে না, শুধু কাজের পদ্ধতি, অবস্থান ও ধরণ বদলেছে। 

বিদ্যালয়ের এই শিক্ষাপদ্ধতি শিক্ষার্থীরা কিভাবে গ্রহণ করেছে এবং এই ডিজিটাল শিক্ষাপদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষণে অভিভাবকেরা কতটুকু সহায়ক ভূমিকা পালন করছে? 

বিরূপ পরিস্থিতিতে  শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার সাথে সম্পৃক্ততা ধরে রাখার আর কোন উপায় ছিল না। সারাবিশ্ব মূলত এই ভার্চুয়াল পদ্ধতির অবলম্বনেই কোন না কোনভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সর্বোত্তম চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরাও ব্যতিক্রম নই। নাজুক পরিস্থিতির কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হতাশ-নিরাশ শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক ডিজিটাল এই ভার্চুয়াল ক্লাশের শুরুতে কারো-কারো জন্য বিষয়টি যথেষ্ট কঠিন হলেও খুব তাড়াতাড়ি সকলেই খাপ খাইয়ে নিয়েছে যা সকলেকে কার্যক্রমকে সফলভাবে বাস্তবায়নে আরো বেশি অনুপ্রাণিত করেছে। 

ছুটিতে শিক্ষার্থীর কিংকর্তব্যবিমূঢ় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য আশা জাগানিয়া পদ্ধতি অনলাইন ক্লাস। প্রায় সকলেই খুব ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন যদিও সকলের জন্যই চ্যলেঞ্জিং ছিল। ক্লাস ফলো করা, বাড়ির কাজ জমা দেওয়া, পরীক্ষার প্রশ্ন ডাউনলোড করা, পরীক্ষার উত্তরপত্র প্রতিষ্ঠানে পৌছে দেওয়া ইত্যাদি কাজগুলো মূলত অভিভাবকগণের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই সম্ভব হচ্ছে, এক কথায় অভিভাবকগণও পড়ালেখায় নিরত মনোনিবেশ না করলে অনভ্যস্ত শিক্ষার্থীরা হাবুডুবু খেতো।

এই মহামারী সময়ে স্কুলের প্রতিজন কর্মীকে সেবাদানের ক্ষেত্রে আপনাদের ভূমিকা কিরূপ ছিল?

শিক্ষক, কর্মী সকলেই গ্রেগরী পরিবারের সদস্য, তাদের নিজ-নিজ পরিবারগুলোও আমাদেরই পরিবার, এই দুসময়ে প্রতিষ্ঠানের সামর্থ অনুযায়ী তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক ও নৈতিক দায়িত্ব-এটি এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মহোদয়ের অন্তরানুভূতি। একই সাথে শিক্ষার্থীর জন্য যেহেতু শিক্ষক সম্ভাব্য সকল কিছুই করে যাচ্ছেন, অভিভাবকদেরও নৈতিক দায়িত্ব শিক্ষকের পাশে দাঁড়ানো।শিক্ষার্থীদের মঙ্গলের জন্য যা কিছু করা সম্ভব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সুপরিকল্পিতভাবে সবই করা হচ্ছে, অবশ্যই শিক্ষকদের আন্তরিক সহায়তার বলে। শিক্ষক ও কর্মীগণ ঐ সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অত্যন্ত আন্তরিক বিধায় প্রতিষ্ঠান তাদের নিশ্চয়তা দিয়েছে যতদিন প্রতিষ্ঠানের সামর্থ আছে, ততদিনই তাদের সকল আর্থিক সুবিধা ও পাওনা দেওয়া হবে এবং তা পরিমাণে অনেক হলেও নিয়মিত চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। 

অনলাইনে তো সব শিক্ষার্থী ক্লাস করতে পারছে না, সেসব শিক্ষার্থীর জন্য প্রতিষ্ঠানের ভাবনা কি?  

অনলাইন ক্লাস নেওয়ার সাথে আমাদের প্রতিষ্ঠান যে মূল্যায়নের অর্থাৎ ১ম ও ২য় সাময়িক পরীক্ষার আয়োজন করেছে তাতে দেখা গেছে ৯৫% এর বেশি শিক্ষার্থী উত্তরপত্র জমা দিয়েছে। এক্ষেত্রে ধরেই নেয়া যায় যে, প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থীরাই ভার্চুয়াল ক্লাসের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে। বাকী ৫% কিংবা তার চেয়ে কম সংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য প্রতিষ্ঠান নানাভাবে চেষ্টা করছে, তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে তাদের সম্পৃক্ত করতে। এমনও কিছু শিক্ষার্থী পাওয়া গেছে যারা পারিবারিক বা অন্যান্য কারণে মোবাইল বা নেট ব্যবহারে অনিচ্ছুক, সেক্ষেত্রে তাদের বিষয়ে নির্লিপ্ততাই আমাদের একমাত্র উপায়।১-২% শিক্ষার্থী শিক্ষা থেকে ঝরে পড়তে পারে এই ভাবনাটাও অমূলক নয়, তাই এই অল্প সংখ্যক সমস্যা বা সমস্যাগ্রস্ত শিক্ষার্থীর কারণে সবাইকে বঞ্চিত করার কোন মানেই হয় না।

ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্লাস নেয়া এবং শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ শিক্ষকদের কাছে কতটুক সন্তোষজনক বলে মনে করেন? 

প্রথম দিকে কেউ-ই অভ্যস্ত ছিল না, তাই বিষয়টি প্রশ্নবোধক ছিল, আদৌ সফল হবে কি না। কিছুদিনের মধ্যে আমাদের শিক্ষকগণ পারস্পরিক সহায়তা-সহভাগিতা, অন্যের ক্লাশ পরিদর্শন ও নিজেকে মূল্যায়নের মাধ্যমে উন্নতি করেছেন।

  • বর্তমানে আমাদের শিক্ষকগণ দারুণভাবে ক্লাস নিচ্ছেন, ফেইসবুক লাইভ, রেকর্ডেড ক্লাস পোস্ট, জুম লাইভ ক্লাস, গুগল লাইভ ক্লাস ও সম্ভাব্য এই সকল ভার্চুয়াল পদ্ধতিতেই আমাদের শিক্ষকগণ বর্তমানে ক্লাস নিচ্ছেন।
  • নিসন্দেহে বলা যায়, প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই পদ্ধতিতে আমরা ৯০-৯৭% সফল। 

বর্তমানে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর বিষয়ে নতুন পদক্ষেপ কি? 

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত ও নির্দেশিত ভার্চু্য়াল পদ্ধতিতে আমাদের কলেজ শাখায় নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করতে হচ্ছে যা আর একটি নতুন চ্যালেঞ্জ আমাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য দেশে এখনো কিছু সফটওয়্যার অপ্রতুল, ইন্টারনেট দুর্বল ও সকল স্থানে এর প্রাপ্যতা নেই, তাছাড়া বিদ্যুৎ সমস্যাতো আছেই। এরই মধ্যে সেন্ট গ্রেগরী অনেক চড়াই-উৎরাই পার করে ভর্তি প্রক্রিয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সমাপ্ত করতে যাচ্ছে। 

অনলাইন আবেদন শেষে, ভার্চূয়াল ড্যামো পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে এবং অবশেষে ভার্চুয়াল চূড়ান্ত পরীক্ষা নিয়ে রেজাল্ট প্রদান করে ভর্তি নেওয়া প্রায় শেষের দিকে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যাদের ক্ষেত্রে উল্লিখিত বিভিন্ন কারণে চূড়ান্ত পরীক্ষায় কোন ধরণের সমস্যা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানকে জানিয়েছে, তাদের বিশেষ বিবেচনায় ২য় বার পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে যেন কেউ বঞ্চনার শিকার না হয়। 

পরবর্তীকালে যখন স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার অনুমতি দেয়া হবে তখন কি কোন ব্যতিক্রম পরিকল্পনা আছে? 

অবস্থা বুঝে আমাদের সকলেই ব্যবস্থা নিতে হবে, তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি সারা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়েই আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব পাবে এতে কোন সন্দেহ নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যখনই খুলে দেওয়া হোক না কেন আমাদের লক্ষ্য হলো সকল শিক্ষার্থী যেন এবছরের কাঙ্ক্ষিত শিখন ফল ১০০% অর্জন করে পূর্ণ যোগ্যতা নিয়ে পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ এবং যেন পরবর্তী শ্রেণির নতুন সিলেবাসে হাবুডুবু না খায়। 

ব্যবস্থা যা-ই নেওয়া হোক না কেন তার অপেক্ষায় না থেকে আমরা পর্যায়ক্রমে ১ম ও ২য় সাময়িকের সিলেবাস সফলভাবে সমাপ্ত করে মূল্যায়ন পরীক্ষা নিয়েছি। এখন ৩য় সাময়িক অর্থাৎ বার্ষিক সিলেবাসে পাঠদান চলমান আছে। বার্ষিক পরীক্ষাও পরিস্থিতি অনুযায়ী নেওয়া হবে এবং আগামী বছরের জন্য শিক্ষার্থী পূর্ণভাবে না হলেও অত্যন্ত সন্তোষজনকভাবে যোগ্যতা সহকারে উত্তীর্ণ হবে। 

 সকল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আপনার মূলবান কিছু কথা বলুন। 

জীবনে আসা যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার শিক্ষাই হলো সবচেয়ে বড় শিক্ষা। এই করোনা পরিস্থিতে প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক ও কর্মীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে কৃতজ্ঞতার সাথে সহমর্মী থাকতে হবে। আজ সময়ের আহ্বান এসেছে, এই ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রবেশ করতেই হবে, হয়তো আগামীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও নানা কারণে সপ্তাহে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে না এসে ঘরে বসেই ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে পাঠদান ও গ্রহণ চালু হতে পারে, কে জানে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ বলে যে, পড়ালেখাও বন্ধ তা চিন্তা করার অবকাশ নেই। সকল শিক্ষার্থীকে কঠোর পরিশ্রম করে শিক্ষককের নির্দেশ মেনে প্রতিষ্ঠানের আয়োজিত সকল কর্মে সম্পৃক্ত হতেই হবে; যেন কাঙ্ক্ষিত ১০০% শিক্ষণফল অর্জন করে যোগ্যতা নিয়ে প্রমোশন পেয়ে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হতে পার। 

  • করোনা পরিস্থিতির শিকার ও ক্ষতিগ্রস্ত সকল মানুষের প্রতি যথাসম্ভব অনেক উদার ও মানবীয় হতে হবে এবং যার যার সামর্থ অনুসারে নিজ-নিজ বলয়ে অন্যকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।
  • পিতা-মাতার ওপর বেশি চাপ সৃষ্টি করবে না কারণ তারাও আর্থিক, মানসিক ও সামাজিকভাবে কোন না কোনভাবে আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত।
  • জীবনের কম প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো বাদ দিতে শিখতে হবে এবং অত্যাবশ্যকীয় বিষয়গুলোও কৃচ্ছ্রতার সাথে ব্যবহার করতে শেখ।
  • প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রতি অর্থাৎ ধরিত্রী মাতাকে সচেতনতার সাথে ব্যবহার, যত্ন ও সংরক্ষণ করতে ব্রতী হতে হবে যেন তোমরাও প্রকৃতির যত্নে বেড়ে উঠতে পারো। 

উপসংহার : জরুরী এই পরিস্থিতিতে সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ যেভাবে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অধিকার নিশ্চিত করে যাচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত সকলকে সামর্থ অনুযায়ী সহায়তা করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের এমন পদক্ষেপ ঐতিহ্য  ও সুনামকে আরো সমৃদ্ধ করুক ও শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়তে যুগ-যুগ ধরে করে অবদান রাখুক এটাই প্রত্যাশা।


[ পাঠকদের  দৃষ্টি আকর্ষণ:  করোনাকালে আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমন কোন অগ্রণী ভূমিকা কি ছিল যা নিয়ে জীবন ও সমাজে ফিচার হিসেবে দেয়া যেতে পারে। তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন : jibonoshomaj@gmail.com ]

1 Comments

  1. Thanks for writing such a beautiful and informative article! I really enjoyed reading it! Thanks again! I myself am a blog writer! I have some blogs for your audience! I hope they can learn a lot from my article! If you have any questions about Skills Development and Freelancing, visit TEvan Academy.
    1- Express Vpn Premium Account For Free 2022
    2- Payday Loans: The Complete Guide to Payday Loans

    3- Automobile Insurance IN South Dakota

    4- How Your Legal Needs Can be Solved by a Canadian Lawyer 2022

    ReplyDelete
Previous Post Next Post