বাঙালীর ইতিহাসে অম্লান র্মাচ


বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ দীর্ঘ নয় মাস যেমনি চিরস্মরণীয়, তেমনি ১৯৭১ সালের র্মাচ অমøান একটি মাস। কেননা এই মাসেই বাঙালী জাতি চরমভাবে সোচ্চার হয়ে ওঠে স্বাধিকার আদায়ের ব্যাপারে। আবার এই মাসেই বাঙালী জাতির ওপর অপ্রত্যাশিতভাবে হামলা চালানো হয়। তারপরও বীর বাঙালী থেমে যায়নি, বরং ঝুঝতে পেরেছে কঠোর হস্তে শত্রুকে দমন না করলে হবে না। তাই তো এই মাসেই বাঙালী জাতি আবার জেগে উঠেছিল নবচেতনায় ও উদ্যমতায়। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার পরপরই শুরু হয় যুদ্ধের চুড়ান্ত পর্ব।

বাঙালীর ইতিহাসে অম্লান র্মাচ


১৯৭১ সালে ১ মার্চ আকস্মিকভাবে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘেষণা করা হয়। যার ফলশ্রুতিতে ঢাকাসহ সারা পূর্ব পাকিসÍানে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে এবং অধিবেশন ¯থগিতের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ ২ মার্চ ঢাকায় এবং ৩ মার্চ সারাদেশে হরতালের কর্মসূচী ঘোষণা করে। ২ মার্চ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। আর সভা শেষে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের কলাভবনে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর এই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের আন্দোলনের কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ৪-৬ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন অর্ধবেলা হরতাল পালনের ডাক দেয়া হয় এবং আরও অনেক কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়। আর এসব কর্মসূচি পালনকালে পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক সহিংসতায় বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। আর পরিস্থিতির ভয়াবহতা লক্ষ্য করে ইয়াইয়া খান ৬ মার্চ এক বেতার ভাষণে ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করে। পরদিন অর্থাৎ ৭ মার্চ বাঙালী জাতির জীবনের আরেকটি অবিস্মরণীয় দিন। বঙ্গবন্ধু আগেই ঘোষণা করেছিলেন ৭ মার্চ রবিবার রেসর্কোস ময়দানে তিনি পরবর্তী কর্মপন্থা ঘোষণা করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্য রাত বাঙালী জাতির ইতিহাসে একটি ভয়াল কালরাত্রি হিসেবে পরিচিত। পাকিস্তানের রজিনৈতিক সংকটের পূর্ণ মীমাংসার ক্ষেত্র যখন প্রস্তত তখন আলোচনার ফলাফল সংক্রান্ত কোন ঘোষণা না দিয়েই ইয়াইয়া খান ২৫ মার্চ রাতের অন্ধকারে ঢাকা ত্যাগ করে এবং তার সামরিক বাহিনী অযাচিতভাবে বাংলাদেশের নিরস্ত্র জনতার ওপর প্রবল আক্রোশ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আসলে, বর্বর ইয়াইয়া খানের বৈঠক ছিল প্রতারণার কৌশল মাত্র। মূলত ওই আলোচনার ফাঁকে চট্টগ্রাম বন্দরে পশ্চিম পাকিস্তান হতে বিপুল অস্ত্র সম্ভার আনায়ন করা হয়। ওই দিনে অর্থাৎ ২৫ মার্চের অতর্কিত হামলায় ঢাকায় প্রায় ৫০ হাজার নর-নারীকে পাক বাহিনী নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। একই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। সেই ভয়াল কাল রাতে তিনি গ্রেফতার হওয়ার কিছুক্ষণ আগেই টিএ্যান্ডটি এবং ইপিআরের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে স্বাধীনতার ঘোষণা পৌঁছে দেন। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘেষণাপত্র ২৬ মার্চ মো: আব্দুল হান্নান ও ২৭ মার্চ মেজর জিয়াউর রহমান পাঠ করেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post