১০ সেকেন্ড হোক বা ১ ঘন্টা, সময়ের ব্যবধানটা কম বেশি হলেও লেট মানেই লেট! যদিও সময়ের ব্যপারে অনেকে অসচেতন তথাপি আমাদের আশেপাশে এমনই কিছু মানুষ রয়েছে যারা যেখানেই আর যেকোনো কাজেই হোক না কেন, সময়ের ব্যাপারে তাদের একটুও নড়চড় হয় না।
ইতিহাস সৃষ্টির পেছনেও রয়েছে শত-সহস্র-কোটি পল-অনুপল-মুহূর্তের ঘন সন্নিবদ্ধ সাঁকো-বন্ধন। আমাদের জীবনও পল-অনুপল-মুহূর্তের সমষ্টি মাত্র। পদ্মপত্রে অস্থির, চঞ্চল নীরের মতো তার অবস্থান। তবুও ক্ষণস্থায়ী জীবনের সাথে সময় ও ইতিহাসের নিরবচ্ছিন্ন সম্পর্ক বিদ্যমান। সময়ের সাথে জীবনের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক বিদ্যমান। জীবন মূলত সময়েরই সমষ্টি। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সময়টাই জীবন।
![]() |
চাই সময় ব্যবস্থাপনা |
যদিও সময়ের কাজ সময়ে করার অভ্যাস গড়ে তোলা একটি কষ্টসাধ্য ও অনেক সময়সাপেক্ষ বিষয়। কারণ সময়ের উপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই কিন্তু কাজকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। ফলে সময়ের কাজ সময়ে করার জন্য লক্ষ্য রাখতে হবে, কাজের জন্য নেওয়া সিদ্ধান্তগুলির সঠিকতা ও উপলক্ষের উপরে, কাজের ব্যবহৃত সহায়-সম্পদের ব্যবস্থাপনার ধরণ ও উপযোগীতার বিষয়ে। আর এই বিষয়গুলির ব্যবস্থাপনা নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট কাজের উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনার উপর। এই জন্য সাধারণভাবে বলা হয়ে থাকে যে, একটি কাজের যথাযথ পরিকল্পনা ঐ কাজ সম্পাদনের পূর্বশর্ত। সুতরাং কোনো কাজ করার পূর্বে ঐ কাজের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নির্ধারণ আর কর্ম-পরিকল্পনায় বেশী সময় দিন। সময়কে যদি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারেন সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছতে বেশি সময় লাগবে না। ক্যারিয়ারের যে কোনো বাধা ডিঙানো সম্ভব হবে। কেউ আটকে রাখতে পারবে না সাফল্যকে। এ লক্ষ্যে সময়ের চাকাকে নিয়ন্ত্রণ করার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।
লক্ষ্যহীন কোনো কাজে সাফল্য অর্জন করা যায় না। এ জন্য শিখতে হবে টাইম ম্যানেজমেন্ট। এ বিষয়ে, প্রথমেই চিন্তা করুন আগামীকাল কোন কাজটি সবচেয়ে বেশি জরুরী। চেষ্টা করুন সময়মতো পারলেও সময়ের আগেই কাজটি শেষ করতে। এছাড়া অন্যান্য কাজকেও অবহেলা করলে চলবে না। বরং আরও বেশি যতœ নিয়ে কাজগুলো করতে হবে। নিয়মিত একটি ক্যালে-ার ব্যবহার করেন। রুটিন করার সময় প্রতিটি কাজের জন্য অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ রাখেন। সেই কাজটিই করেন যেটাতে আনন্দ খুঁজে পান। অ্যলার্মের বিষয়ে এক কথায় মাস্টার হতে হবে। প্রতিটি কাজের অগ্রাধিকার সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখুন। যাতায়াতের বিষয়টি ম্যানেজ করায় পারদর্শী হতে হবে। সবকিছুতেই প্ল্যান করুন। সময়ানুবর্তিতাকে গুরুত্ব দিন। শুধু পরিকল্পনা নয়, চেষ্টা করতে হবে তা বাস্তবায়ন করার। প্রথমদিকে রুটিনমাফিক কাজ করা অসুবিধা হয়ে দাঁড়ায়। পরবর্তীতে সময়কে শাসন করতে হবে নিজের মন মতো। সেকে-ের হিসাবে সময়কে হিসাব করা উচিত। তাই সময় নষ্ট করবেন না। প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান, হিসাব কষে আর জীবনের চাওয়া-পাওয়ার বিন্যাসেই সময়কে খরচ করা উচিত। যারা সময়ের কাজ সময়ে করে তাদের কাছে সফলতা নতজানু স্বীকার করে। বদলে যায় তাদের ভাগ্য।
গতিকে কেন্দ্র করে যে কেউ আবর্তন করতে পারে একটি লক্ষ্যের দিকে। মনে রাখতে হবে, সময় ও স্রোত কারও জন্য বসে থাকে না। আপনার অবর্তমানে আরেকজন সময়কে ব্যবহার করতে পারলে আপনারও তা করার ক্ষমতা থাকা উচিত। মনে রাখতে হবে, সময় হলো শিকারি কুকুরের মতো প্রভুভক্ত। তাই তাকে শাসন করাই সাজে, সবসময় আদর করা নয়। সময়কে যদি নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারেন তাহলে সফলতার বদলে ব্যর্থতা দিয়ে ভরে উঠবে জীবন।
জ্যাষ্টিন গোমেজ
Tags:
সমাজ