বই হোক মানুষের নিত্যসাথী

বই হোক মানুষের নিত্যসাথী

ইউরোপ কাপানো নেপোলিয়ান একদিন বলেছিলেন : অন্তত ষাট হাজার বই সঙ্গে না থাকলে জীবন অচল। আর অন্যদিকে দার্শনিক দেকার্তে বলেছিলেন: ভালো বই পড়া মানে গত শতাব্দীর সেরা মানুষদের সাথে কথা বলা। বই জ্ঞানের ও আনন্দের প্রতীক। বই পড়ে মানুষ যে জ্ঞান লাভ করে সে জ্ঞান জীবনকে বিকশিত ও সুবাসিত করে তোলে। গোটা বিশ্ব সম্পর্কে ভালভাবে জ্ঞান অর্জন করতে হলে বই-ই অন্যতম একটি সহায়ক। তাই হয়তো অ্যামেরিকান বিখ্যাত অভিনেতা ডরষষ জড়মবৎং বলেছেন, “অ সধহ ড়হষু ষবধৎহং রহ ঃড়ি ধিুং, ড়হব নু ৎবধফরহম ধহফ ঃযব ড়ঃযবৎ নু ধংংড়পরধঃরড়হ রিঃয ংসধৎঃবৎ ঢ়বড়ঢ়ষব.” একটা সভ্যতাকে, একটা শতাব্দীকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য মহা কোন পরিকল্পনা করার দরকার নেই। ঐ সভ্যতার সবগুলো বইও পুড়ে ফেলার কোন প্রয়োজন নেই। শুধু মানুষকে বই পড়া থেকে বিরত রাখতে পারলেই তা হয়ে যাবে। তাইতো অ্যামেরিকান লেখক ইৎধফনঁৎু বলেছেন, “ণড়ঁ ফড়হ'ঃ যধাব ঃড় নঁৎহ নড়ড়শং ঃড় ফবংঃৎড়ু ধ পঁষঃঁৎব. ঔঁংঃ মবঃ ঢ়বড়ঢ়ষব ঃড় ংঃড়ঢ় ৎবধফরহম ঃযবস.”

বই হোক মানুষের নিত্যসাথী


বই পড়ে মানুষ কি না পায়! স্থবির মনের উদ্দীপনা বাড়াতে বইয়ের চেয়ে ভালো আর কিছুই হতে পারে না। খুবই মানসিক চিন্তায় আছেন। সুন্দর একটি বই পড়া শুরু করুন। দেখবেন অবসাদ কমে যাচ্ছে। একমাত্র বই পড়ার মাধ্যমেই নতুন শব্দভান্ডারে নিজেকে সমৃদ্ধ করা যায়। স্মরণশক্তি বাড়াতে দারুন এক কার্যকরী ভূমিকা রাখে। যেকোনো একটা বিষয়ে বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা অথবা দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। শুধু যে ভালো বিশেষণ করার ক্ষমতা অর্জন করা যায় তা নয়, ভালো বই পাঠ চিন্তার উৎকর্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে। মানসিক প্রশান্তি বাড়াতে বই এর চেয়ে ভালো আর কিছুই হতে পারে না। নির্জনতায় নিজের মতো করে শব্দহীন বিনোদন, নিজের মাঝে নির্মল পরিবেশের সুন্দর একটি আবহ তৈরী করতে, প্রয়োজন বই, বই আর বই। একটি ভালো বই মানুষকে পথ দেখায়। জীবনের বন্ধ দরজা-জানালাগুলো খুলে দেওয়ার জন্য বইয়ের বিকল্প নেই। বই এর মধ্যে রয়েছে অনন্ত যৌবন। আর এ অনন্ত যৌবনের স্বাদ একবার যে উপলব্ধি করতে পারে সেই খুঁজে পাঁয় জীবনের আস্বাদ।


এটি এখন পরিতাপের বিষয়, বর্তমানে বই পড়ার অভ্যেস এখন আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। মাল্টিমিডিয়া বাড়িতে বইয়ের স্থান দখল করে নিয়েছে। ক্যাবল টিভির চ্যানেলগুলোতে একের পর এক অনুষ্ঠান সব বয়সের মানুষের অবসর কেড়ে নিয়েছে। আমাদের অবসর সন্ধ্যাগুলোয় প্রতিদিন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মত বাঁশি বাজিয়ে নেশাচ্ছন্ন করে রাখে। মনে রাখতে হবে, সাহিত্য সমাজ বদলের হাতিয়ার। প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে কথাটি অবশ্যই সত্যি। তাই সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে বেশি- বেশি বই পড়া হলে আমরা আমাদের মানসিকতার উন্নয়ন ঘটাতে পারবো।


একজন মানুষ যে পেশায়ই দক্ষ হোক না কেন তার পেশাদারিত্বে উৎকর্ষতা অর্জনের জন্য বার-বার বইয়ের কাছে ফিরে আসতে হয়। কারণ জ্ঞানের সূচনা সেখান থেকে এবং সে জ্ঞানকে সামগ্রিকভাবে কাজে লাগানোর দক্ষতা মানুষ বই পড়ে পেয়ে থাকে। মানুষের মননশীল, চিন্তাশীল, সৃষ্টিশীল চিন্তার যাবতীয় সূচনার বিস্ফোরণ বইয়ের মাধ্যমে হতে পারে। তাই পড়ুন জ্ঞানের জন্য, প্রজ্ঞাবান হবার জন্য, জীবন ও জগতকে ভালোভাবে বুঝার জন্য, প্রাণী হিসেবে মানুষ যেসব বোকামিতে পড়ে সর্বদা সেগুলি বোঝার জন্য এবং সেগুলিতে কম পড়ার জন্য। অপেক্ষাকৃত কম বোকা আপনি হতে পারবেন ভালো বই পড়ে। ভালো বই পড়ুন, তাতে কোন প্রতিযোগিতা নেই। ফলে বার-বার একই বই পড়তে অসুবিধা নেই। বছরে পাঁচটা ভালো বই পড়া, পাঁচশোটা বাজে বই পড়ার চেয়ে ভালো। কথা একটাই বই হলো জ্ঞানের ভান্ডার।



 লেখক : জ্যাষ্টিন গোমেজ

Post a Comment

Previous Post Next Post