ইন্টারনেটের ক্যাশ সার্ভার

জীবন ও সমাজ ডেস্ক :  ক্যাশ সার্ভার কী, সেটা জেনে নেওয়া জরুরি। ধরুন, আপনি ইউটিউবে একটি ভিডিও দেখলেন। এই ভিডিওর বিপরীতে ব্যান্ডউইডথ এল ইউরোপ থেকে। একবার দেখার পর ভিডিওটির বিপরীতে ব্যান্ডউইডথ আপনার ইন্টারনেট সেবাদাতার সার্ভারে জমা হবে। এরপর যতবার এ দেশের গ্রাহক ওই ভিডিও দেখবেন, তা ওই সার্ভার থেকে দেখানো হবে। নতুন করে ইউরোপ থেকে ব্যান্ডউইডথ আনতে হবে না।

ক্যাশ বসানোর সুবিধা হলো, মানুষের কাছে জনপ্রিয় কনটেন্ট বা আধেয়র বিপরীতে বেশি গতিতে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া যায়। কারণ, এই আধেয়র বিপরীতে ব্যান্ডউইডথ স্থানীয় ক্যাশ সার্ভারে জমা থাকে। বারবার ব্যান্ডউইডথ পরিবহন করতে হয় না বলে ইন্টারনেট সেবাদাতার খরচও কম থাকে।



যখন গুগল তার ট্রাফিকগুলো বন্ধ করা শুরু করবে, তখন আইআইজি, নিক্স, নেশনওয়াইড আইএসপির কাছে স্থানীয় আইএসপিগুলো বাড়তি ব্যান্ডউইডথ চাওয়া শুরু করবে। আর তখনই বোঝা যাবে, দেশে কী পরিমাণে সার্ভারের চাহিদা আছে। তিনি বলেন, চাহিদা অনুযায়ী যদি ব্যান্ডউইডথ না দেওয়া যায়, তখন গ্রাহক ভোগন্তিতে পড়বেন। তবে এই ভোগান্তি হবে ছোট শহরে। বড় শহরে এটা বোঝা যাবে না।

বাংলাদেশে কী পরিমাণে সার্ভারের চাহিদা ও কত প্রতিষ্ঠানের হাতে ক্যাশ সার্ভার আছে, তার সঠিক কোনো তালিকা নেই। আইআইজি ফোরামের মহাসচিব আহমেদ জুনায়েদ প্রথম আলোকে বলেন, যেসব আইএসপি আইনগতভাবে সার্ভার আমদানি করেছে, তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না। এখন কতজনের সার্ভার বন্ধ হবে, সেই হিসাব নেই।

বিটিআরসি ক্যাশ সার্ভার সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের শৃঙ্খলা, জাতীয় নিরাপত্তা, রাষ্ট্রের সুরক্ষা ও গ্রাহকসংখ্যা পর্যবেক্ষণের যুক্তি তুলে ধরে।

ক্যাশ সার্ভার স্থানীয় পর্যায়ে যেভাবে চলে গেছে, তাতে নিরাপত্তার বিষয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা থেকে আপত্তি উঠেছে। এসব সার্ভার থেকে অনলাইনে ধ্বংসাত্মক গেম ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, গ্রাহক ভোগান্তিতে পড়ুক, সেটা বিটিআরসি চায় না। তাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সার্ভার হস্তান্তর করা যায় কি না, তা দেখা হবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ক্যাশ সার্ভার স্থানীয় পর্যায় থেকে সরিয়ে নেওয়ার একটি উদ্দেশ্য হলো ইন্টারনেট ব্যবস্থার ওপরে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা। গুটিকয় প্রতিষ্ঠানের হাতে ক্যাশ সার্ভার থাকলে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা সেখানে নিরাপত্তা যন্ত্র বা ডিভাইস বসাতে পারে। শত শত স্থানীয় পর্যায়ের আইএসপিতে এই যন্ত্র বসানো কঠিন। এই সিদ্ধান্তের ফলে ব্যান্ডউইডথ পরিবহন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা বাড়বে।

তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, গুগল বা ফেসবুকের মতো প্রতিষ্ঠানের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। তাই কোনো আধেয় (কনটেন্ট) নিয়ে সরকারের আপত্তি থাকলেও তা চাইলেই বাংলাদেশে প্রচার বন্ধ করা যাবে না। তাই ক্যাশ সার্ভার যেখানেই থাকুক, তার সঙ্গে নিরাপত্তার তেমন কোনো সম্পর্ক নেই।

[জীবন ও সমাজে- পাঠাতে পারেন আপনারও বস্তুনিষ্ঠ লেখা প্রবন্ধ, গল্প ও ফিচার। 
লেখা পাঠানোর ঠিকানা : jibonoshomaj@gmail.com ] 

[দৃষ্টি আকর্ষণ: যদি মনে করেন এমন কোন আলোকিত ব্যক্তিকে নিয়ে আমাদের জীবন ও সমাজের অনলাইন ম্যাগাজিনে বিশেষ ফিচার করা যেতে পারে, তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। আমরা সেই ফিচার করে তার আলো ছড়াবো, যাতে অন্যরাও সেই ব্যক্তিত্বের আলোয় আলোকিত হতে পারে। 

 আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন : jibonoshomaj@gmail.com] 

[পাঠকদের  দৃষ্টি আকর্ষণ:  করোনাকালে আপনার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের এমন কোন অগ্রণী ভূমিকা কি ছিল যা নিয়ে জীবন ও সমাজ-এ ফিচার করা যেতে পারে। তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন : jibonoshomaj@gmail.com]  


Post a Comment

Previous Post Next Post