একসাথে চলার প্রত্যয়ই হোক আগামীর লক্ষ্য

সম্পাদকীয়, জানুয়ারি- ২০২১ :  ২০২০ সালকে অতিবাহিত করে আমরা ২০২১ সালে পদার্পণ করলাম। এ জন্যে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দেই তার কৃপার ফলে আমরা এখন অবধি সুস্থ আছি। কম-বেশি সবার জীবনে ২০২০ সাল একটি বিস্মৃত বছর ছিল। করোনার কড়াল ঘাতে কারো জীবন গত হয়েছে কিংবা কারো জীবন করোনার প্রভাবে প্রভাবিত হয়েছে। তবে আর যাই হোক না কেন, এই করোনা আমাদের শিখিয়ে দিয়েছে আমাদের একসাথে থাকতে হবে। মানুষ হিসেবে আমাদের একে-অপরের প্রয়োজন আছে। প্রয়োজন আছে আমাদের প্রকৃতির যত্ন নেয়া। আর আমরা উপলব্ধি করতে পেরেছি প্রকৃতি ও পরিবেশ কতটা অযত্নে ছিল। আর মানুষ প্রমাণও করে দিয়েছে মানুষ মানুষের জন্যে। মহামারি করোনায় মানুষ মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এমন উদাহরণ প্রচুর। আর এখন পর্যন্ত মানুষে-মানুষে, দেশে-দেশে ভুল বোঝাবুঝি ভুলে গিয়ে একে-অপরকে সাহায্য-সহযোগিতায় এগিয়ে আসছে। সকলে মিলে করোনার টিকা তৈরিতে মনোনিবেশ করছে। সবার মূল লক্ষ্য একটাই, তা হলো- মানব জাতিকে রক্ষা করতে হবে ও সকলের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। ইতোমধ্যে, বেশ কয়েকটি দেশে টিকা প্রস্তুত ও টিকা দান শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র প্রধানগণ টিকা নিয়ে অন্যদের উৎসাহিত করছেন। তার মধ্যে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস নিউইয়র্কে তার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন। জাতিসংঘ দপ্তরের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক প্রতিবেদন থেকে একথা জানা যায় । জাতিসংঘ প্রধান টুইটার বার্তায় বলেন, তিনি টিকা নিতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন এবং কৃতজ্ঞ হয়েছেন। তিনি সমতার ভিত্তিতে প্রত্যেকের জন্য ভ্যাকসিন সহজলভ্য করা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। জাতিসংঘ প্রধান লিখেছেন, ‘এই মহামারির কবল থেকে আমরা কেউ নিরাপদ না যতক্ষণ না আমরা সকলে নিরাপদ।’ আর আমাদের দেশে কুর্মিটোলা হাসপাতালের সেবিকা রুনু ভেরোনিকা কস্তাকে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন প্রদানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয় বাংলাদেশের করোনাভাইরাস টিকাদান কর্মসূচি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিয়ো কনফারেন্সে যোগদান করে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

ইতোমধ্যে, সারা বিশ্বের মধ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গিয়েছে। এমতাবস্থায় আমাদের প্রত্যেকের উচিত সাবধানতা অবলম্বন করা। আমাদের অবহেলা যেন আমাদের ঝুঁকির কারণ না হয়। আমাদের দেশ ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশের সাথে যোগাযোগ করছেন কিভাবে দেশের মানুষের জন্যে টিকা আনা যায়।  এক্ষেত্রে সরকার প্রধানের নিকট অনুরোধ এই টিকা নিয়ে যেন কোন সিন্ডিকেট কিংবা কোন রকম অপকর্ম না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য। দেশে ভাল মানুষের পাশাপাশি অসাধু মানুষের কমতি নেই। তাদের মতিভ্রমের ফলেই তো বিভিন্ন সময়ে তারা বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে। আমরা বিশ্বাস করি, সরকার প্রধানগণ দেশের ও দেশের জনগণের কথা ভাবেন। সমস্যা শুধু একশ্রেণী বিবেকবর্জিত মানুষদের নিয়ে যারা কিনা নিজেরদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্যে দেশের ক্ষতির কথাও চিন্তাও করে না। এমন মানুষ কম-বেশি সব জায়গাতেই রয়েছে। আশা করছি, অচিরেই তাদের মধ্যে শুভবোধ উদয় হবে ও দেশের কাজে মনোযোগি হবে।

আশা রাখি, এবারের নতুন বছর ২০২১ সালে আমরা নতুন জীবনের যাত্রা করবো। শুরু হবে আরও একটি নতুন জীবন। নতুন বছরের সূচনালগ্নে সবার প্রত্যাশা হোক- পুরনো বছরের হিংসা, বিদ্বেষ, শত্রুতা, হানাহানি ভুলে গিয়ে নতুন বছরে নিজেকে নতুনভাবে গড়ে তোলা। পুরনো বছরের পাপগুলো হিসাব করে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে ক্ষমা চাই। আর নতুন বছরে পুরনো পাপগুলো দ্বিতীয়বার না করার দৃঢ় সঙ্কল্প করি। কারণ, দৃঢ় সঙ্কল্প জীবনবোধ ও চিন্তার জগতে পরিবর্তন আনতে বাধ্য নতুন বছরের আগমন। তাই প্রত্যাশার পারদে যোগ হোক ইতিবাচক চিন্তা-চেতনা। লক্ষ্য হোক মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো। কামনা করি, সব ধরনের স্থবিরতা কাটিয়ে নতুন বছর সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল আনন্দ। দেশে ফিরে আসুক শান্তি, সমৃদ্ধি, স্বস্তি ও গতিময়তা।

‘জীবন ও সমাজ’ হলো একটি মাসিক অনলাইন ম্যাগাজিন পোর্টাল। আর মাস শেষে ‘সম্পাদকীয়’-এর মাধ্যমে মাসিক ম্যাগাজিনের পরিপূর্ণতা লাভ করে। আর এই মাসের আয়োজনে ছিল : 

Post a Comment

Previous Post Next Post